Kahhak: Where Fiction, Thriller, Romance, Comedy Come Alive

banner

নানা রূপে নানা প্রেম : প্রতিটি পর্যায়ের ভালোবাসার কোলাজ

প্রেম-ভালোবাসা-রোম্যান্স 

 

প্রেম শ্রেষ্ঠ ইমোশনের নাম। ভালোবাসা বা রোম্যান্স সম্পর্কিত আলোচনা করতে বসলে প্রথমেই রবীন্দ্রনাথের বিচিত্র প্রবন্ধের কয়েকটি লাইন মনে পড়ে। “যে প্রেম কাঁদায় সেই প্রেমই আবার চোখের জল মুছাইয়া দেয়। হাসির আলো ফুটাইয়া তোলে। হাসিতে, অশ্রুতে, আলোতে, বৃষ্টিতে আমাদের চারিদিকে সৌন্দর্যের উপবন প্রফুল্ল করিয়া রাখে। প্রেম কাহাকেও চিরদিন কাঁদিতে দেয় না। যে প্রেম একের বিরহে তোমাকে কাঁদায়, সেই প্রেমই আর পাঁচকে তোমার কাছে আনিয়া দেয়…”

 

দেহ ছাড়া অতীন্দ্রিয় প্রেম বলে কিছু হয় না। আবার কাম বা যৌনতার কথাও ওঠে না। কারণ কেবল দৈহিক আকর্ষণ কিন্তু প্রেম নয়। মানুষই একমাত্র প্রাণী, যে শরীর থেকে মন এবং মস্তিষ্ককে পৃথক রাখতে পেরেছে। প্রেম যদি হয় কোনো গোপন রসায়ন, তাহলে প্রেমিক হয়ে ওঠে অলীক সত্ত্বা। ভালোবাসা যে পায় এবং যে দেয়, দুটি মানুষের মধ্যেই জেগে ওঠে কমনীয়তা, সহৃদয়তা, সংবেদনশীলতা। মানুষের জন্য প্রেম এক অক্সিজেন।

 

সখী ভালোবাসা কারে কয়

 

ভালোবাসা হল স্নেহ, প্রেম, আবেগ, বিশ্বাস এবং সহানুভূতির এক মিলনায়তন। যেখানে ভালোবাসা , সেখানে কেয়ার। একের প্রতি অন্যের পারস্পরিক সহযোগিতা, সদ্ভাবনা, মানসিক নৈকট্য যেখানে অনুভূত হয়, সেখানেই ভালোবাসা প্রস্ফূটিত হয়। ভালোর মধ্যে বাসই ভালোবাসা। বিশুদ্ধ রোম্যান্স কোনো মলিনতা বা সঙ্কীর্ণতাকে স্থান দেয় না। সাচ্চা প্রেম বহতা জলের মতো। মনের ক্লান্তি, অবসাদ ধুয়ে মুছে দেয় একটি সুস্থ প্রেমের সম্পর্ক। অনন্ত গভীরতা আর বিশাল বিস্ময়ের মধ্যে অলীকের সন্ধান।

 

সে কি কেবলই যাতনাময়

 

প্রেম যেখানে প্রধান অতিথি, ব্যাকগ্ৰাউন্ড মিউজিকে বেদনা থাকবেই। “হারাই হারাই সদা হয় ভয়, হারাইয়া ফেলি চকিতে”র মতো একটা অধরা বেদনা, হারিয়ে ফেলার আকুতি, হাহাকার মিলেমিশে একাকার হয়ে থাকে। এখানে যাতনা অবশ্যই আছে, তবে সে যাতনার মধ্যেও মেলে এক অতীন্দ্রিয় সুখ। প্রেমে আনন্দ এবং বেদন দুইই আছে বলেই তো যাপন এত রঙিন।

 

প্রেম ও তার বিভিন্ন সম্পর্কের দিক

 

প্রেম একটি জটিল এবং বহুমুখী আবেগ যার ঠিকঠাক কোনো এক্সপ্ল্যানেশন নেই। এই অনুভূতি আমাদের নেতিবাচক অবস্থা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। জীবনে নতুন উদ্দেশ্য এনে দেয়। তবে প্রেমকে কেবল প্রেমিক প্রেমিকা কিংবা স্বামী স্ত্রীয়ের সম্পর্কের মধ্যে বেঁধে ফেললে ভুল হবে। প্রেম হল সর্বজনীন। রোম্যান্স, স্নেহ, মায়া, মমতা, কেয়ার, অ্যাটেনশনের এক মিশ্র অনুভূতি হল প্রেম। বাবার প্রতি সন্তানের, সন্তানের প্রতি মায়ের, ভাইয়ের প্রতি বোনের কিংবা বোনের প্রতি ভাইয়ের ভালোবাসা… সেও তো প্রেম! সেখানেও মায়া, মমতা, স্নেহ, আদর একের সঙ্গে আরেক সম্পর্কযুক্ত। সেখানে হয়তো রোম্যান্স থাকে না, কিন্তু থাকে পাশাপাশি, কাছাকাছি বন্ধনে থাকার আকুতি।

 

আদর্শ প্রেম

 

আদর্শ প্রেম মানেই কিন্তু একে অন্যের ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলা নয়। বিশ্বাস এবং স্পেস এ দুটি জিনিস ভালোবাসার মর্যাদা দেয়। একে অন্যকে ছেড়ে এক মুহূর্ত থাকতে না পারাও ভালোবাসা নয়।  এ ধরণের রিলেশন কিছুদিনের মধ্যেই টক্সিক হয়ে যায়। রোম্যান্স বা প্রেমিক প্রেমিকার ভালোবাসার যথার্থ করতে গিয়ে আবার সেই রবীন্দ্রনাথের সাহায্য নিতে ইচ্ছে করছে।

 

“প্রণয়ের পাত্র নীচই হউক, নিষ্ঠুরই হউক আর কুচরিত্র হউক, তাহাকে আঁকড়িয়া ধরিয়া থাকাকে অনেকে প্রণয়ের পরাকাষ্ঠা মনে করিয়া থাকে। কিন্তু ইহা বিবেচনা করা উচিত, নিতান্ত অপদার্থ দুর্বল হৃদয় না হইলে কেহ নীচের কাছে নীচ হইতে পারে না। প্রকৃত ভালোবাসা দাস নহে, সে ভক্ত। সে ভিক্ষুক নহে, সে ক্রেতা…”

 

আদর্শ প্রেমের হাজার বৈশিষ্ট্য নানা গুণীজন নানা ভাবে বলে গেছেন। আদতে ভালোবাসা হল ভালোতে বাস। অর্থাৎ উলটো দিকের মানুষটার প্রতি সদ্ভাবনা। যা দুজনকেই বিশ্বাসযোগ্য এবং নিঃশ্বাসযোগ্য করে তুলবে। একের রোম্যান্স অন্যের গলায় ফাঁস হয়ে উঠবে না। তবেই সেই সম্পর্ক মধুর, স্থিতিশীল এবং দৃঢ় হবে।

Post a Comment

Kahhak Publishers
8/1A, Hindustan Park, Kol- 29 83369 66166 publishers@kahhak.com

Error: Contact form not found.